Summary
একটি পরমাণু তিনটি মূল কণিকা (প্রোটন, নিউট্রন, ইলেকট্রন) নিয়ে গঠিত হয়।
- প্রোটন: ধনাত্মক চার্জযুক্ত কণা, যা পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত এবং পরমাণুর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।
- নিউট্রন: নিরপেক্ষ কণা, যা প্রোটনের সাথে মিলিত হয়ে পরমাণুর ভর সংখ্যা গঠন করে এবং নিউক্লিয়াসে অবস্থিত। নিউট্রনের সংখ্যা পরিবর্তিত হলে আইসোটোপ তৈরি হয়।
- ইলেকট্রন: ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণা, নিউক্লিয়াসের চারপাশে কক্ষপথে ঘোরে। এর সংখ্যা প্রোটনের সমান হয়।
প্রধান সম্পর্ক:
- পারমাণবিক সংখ্যা (Z): নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা।
- ভর সংখ্যা (A): নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যা।
- নিউট্রনের সংখ্যা (N): N = A - Z।
উদাহরণ: কার্বন-12-এর জন্য:
- পারমাণবিক সংখ্যা: 6
- ভর সংখ্যা: 12
- নিউট্রনের সংখ্যা: 12 - 6 = 6
- ইলেকট্রনের সংখ্যা: 6 (নিরপেক্ষ পরমাণু)
- আইসোটোপ: একই মৌলের পরমাণু, প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন। উদাহরণ: হাইড্রোজেনের প্রোটিয়াম, ডিউটেরিয়াম, ট্রিটিয়াম।
- আইসোবার: ভিন্ন মৌলের পরমাণু, ভর সংখ্যা সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন। উদাহরণ: কার্বন-14 এবং নাইট্রোজেন-14।
- আইসোটোন: ভিন্ন মৌলের পরমাণু, নিউট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন। উদাহরণ: কার্বন-14 এবং নাইট্রোজেন-15।
পরমাণুতে প্রোটন, ইলেকট্রন ও নিউট্রন সংখ্যার সম্পর্ক
একটি পরমাণুকে তিনটি মূল কণিকা দিয়ে গঠিত বলে মনে করা হয়: প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রন। এই তিনটি কণিকার সংখ্যার উপর নির্ভর করে একটি পরমাণুর ধর্ম এবং তার অবস্থান পর্যায় সারণিতে নির্ধারিত হয়।
প্রোটন
- প্রোটন একটি ধনাত্মক চার্জযুক্ত কণা।
- একটি পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা তার পারমাণবিক সংখ্যার সমান।
- প্রোটন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত।
- প্রোটন পরমাণুর ধাতব বা অধাতব বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।
নিউট্রন
- নিউট্রন একটি নিরপেক্ষ কণা (অর্থাৎ এর কোনো চার্জ নেই)।
- নিউট্রন এবং প্রোটন মিলে পরমাণুর ভর সংখ্যা গঠন করে।
- নিউট্রনও পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত।
- নিউট্রনের সংখ্যা পরিবর্তিত হলে আইসোটোপ তৈরি হয়।
ইলেকট্রন
- ইলেকট্রন একটি ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণা।
- একটি নিরপেক্ষ পরমাণুতে প্রোটন এবং ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান।
- ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।
- ইলেকট্রন পরমাণুর রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে।
প্রোটন, ইলেকট্রন ও নিউট্রনের মধ্যে সম্পর্ক
- পারমাণবিক সংখ্যা (Z): এটি একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটনের সংখ্যার সমান।
- ভর সংখ্যা (A): এটি একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন এবং নিউট্রনের মোট সংখ্যার সমান।
- নিউট্রনের সংখ্যা (N): এটি ভর সংখ্যা (A) এবং পারমাণবিক সংখ্যা (Z) এর পার্থক্যের সমান। অর্থাৎ, N = A - Z.
উদাহরণ: কার্বন-12 পরমাণুকে ধরা যাক। এর পারমাণবিক সংখ্যা 6 এবং ভর সংখ্যা 12।
- প্রোটনের সংখ্যা = পারমাণবিক সংখ্যা = 6
- নিউট্রনের সংখ্যা = ভর সংখ্যা - পারমাণবিক সংখ্যা = 12 - 6 = 6
- ইলেকট্রনের সংখ্যা (নিরপেক্ষ পরমাণুর ক্ষেত্রে) = প্রোটনের সংখ্যা = 6
আইসোটোপ, আইসোবার এবং আইসোটোন:
পরমাণু সম্পর্কে আলোচনা করার সময় আমরা প্রায়ই আইসোটোপ, আইসোবার এবং আইসোটোন শব্দগুলো শুনি। এগুলো মনে হলে একই ধরনের, কিন্তু আসলে এদের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। আসুন এই পার্থক্যগুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
আইসোটোপ (Isotope)
- সংজ্ঞা: একই মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোটোপ বলে, যাদের প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন।
- উদাহরণ: হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ আছে: প্রোটিয়াম (H-1), ডিউটেরিয়াম (H-2) এবং ট্রিটিয়াম (H-3)। এদের প্রোটন সংখ্যা একই (1) কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন।
আইসোবার (Isobar)
- সংজ্ঞা: ভিন্ন মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোবার বলে, যাদের ভর সংখ্যা সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন।
- উদাহরণ: কার্বন-14 (C-14) এবং নাইট্রোজেন-14 (N-14) দুটি আইসোবার। দুটিরই ভর সংখ্যা 14 কিন্তু কার্বনের পারমাণবিক সংখ্যা 6 এবং নাইট্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা 7।
আইসোটোন (Isotone)
- সংজ্ঞা: ভিন্ন মৌলের এমন সব পরমাণুকে আইসোটোন বলে, যাদের নিউট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন।
- উদাহরণ: কার্বন-14 (C-14) এবং নাইট্রোজেন-15 (N-15) দুটি আইসোটোন। দুটিরই নিউট্রন সংখ্যা 8 কিন্তু কার্বনের পারমাণবিক সংখ্যা 6 এবং নাইট্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা 7।
সারণি:
| শব্দ | সংজ্ঞা | উদাহরণ |
|---|---|---|
| আইসোটোপ | একই মৌল, ভিন্ন নিউট্রন | H-1, H-2, H-3 |
| আইসোবার | ভিন্ন মৌল, সমান ভর সংখ্যা | C-14, N-14 |
| আইসোটোন | ভিন্ন মৌল, সমান নিউট্রন | C-14, N-15 |
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more